কেরাটিন ট্রিটমেন্ট কি চুলের ক্ষতি করে? জেনে নিন সত্যিটা (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
চুল সোজা ও ঝকঝকে করার সহজ উপায় হিসেবে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট বর্তমানে বহু মানুষের পছন্দের তালিকায়। বিশেষ করে যাদের চুল খুব ফ্রিজি, রুক্ষ বা অগোছালো, তারা বেশিরভাগ সময়েই কেরাটিন ট্রিটমেন্টে ভরসা রাখেন। তবে প্রশ্ন হলো, এই ট্রিটমেন্ট কি সত্যিই চুলের জন্য ভালো? নাকি এটা চুলের গভীর ক্ষতির কারণ হতে পারে?
এই ব্লগে আমরা বিস্তারিত জানব:
- কেরাটিন ট্রিটমেন্ট কী
- কীভাবে এটি কাজ করে
- উপকারিতা
- ক্ষতির দিক
- ফরমালডিহাইড কীভাবে বিপজ্জনক হতে পারে
- কারা এটি এড়িয়ে চলবেন
- কীভাবে নিরাপদে করবেন
- কেরাটিনের বিকল্প
- শেষ কথা
কেরাটিন ট্রিটমেন্ট কী? (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
কেরাটিন একটি প্রাকৃতিক প্রোটিন যা আমাদের চুল, ত্বক এবং নখে বিদ্যমান থাকে। কেরাটিন ট্রিটমেন্ট হলো এমন একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে কেরাটিন চুলে প্রবেশ করিয়ে সেটিকে সোজা, মসৃণ ও চকচকে করে তোলা হয়।
এই ট্রিটমেন্ট চুলের কিউটিকলে (চুলের বাইরের স্তর) কেরাটিন ঢুকিয়ে, উচ্চ তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে সেটি ‘সিল’ করে দেয়। ফলে চুল হয়ে ওঠে ঝলমলে ও সোজা।
কীভাবে কাজ করে? (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
একটি কেরাটিন ট্রিটমেন্ট সাধারণত নিচের ধাপে সম্পন্ন হয়:
- ক্লিনজিং: প্রথমে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ক্লিন করা হয় যাতে ধুলো-ময়লা ও প্রোডাক্ট বিল্ডআপ না থাকে।
- কেরাটিন অ্যাপ্লিকেশন: এরপর চুলে কেরাটিন সমানভাবে লাগানো হয়।
- সেটিং টাইম: কিছু সময় সেটি রেখে দেওয়া হয় চুলে ভালোভাবে বসার জন্য।
- ব্লো ড্রাই: তারপর চুল ভালোভাবে শুকনো করা হয়।
- হিট সিলিং: ৪৫০°F (প্রায় ২৩০°C) তাপমাত্রায় চুল স্ট্রেইটনার দিয়ে আয়রন করা হয়, যাতে কেরাটিন লক হয়ে যায়।

কেরাটিন ট্রিটমেন্টের উপকারিতা (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
কেরাটিন ট্রিটমেন্ট বহু উপকারিতা দেয়, যেমন:
- চুল ঝলমলে ও চকচকে হয়
- ফ্রিজ ও রুক্ষতা কমে
- চুলে হাত চালানো সহজ হয়
- ব্লো ড্রাই করার সময় অনেক কম লাগে
- স্টাইল করতে সময় লাগে না
- ৩-৬ মাস পর্যন্ত ফলাফল থাকতে পারে
তাহলে সমস্যা কোথায়? (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
কেরাটিন ট্রিটমেন্টে ব্যবহৃত রাসায়নিকগুলো চুলের গঠন পরিবর্তন করে দেয়। এই পরিবর্তন দীর্ঘস্থায়ী হলে চুলের প্রাকৃতিক শক্তি হারিয়ে যেতে পারে।
❗ যে কারণে ক্ষতি হতে পারে:
১. ফরমালডিহাইড (Formaldehyde)
কেরাটিন ট্রিটমেন্টের সবচেয়ে বিতর্কিত উপাদান হলো ফরমালডিহাইড। এটি একটি ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে এমন রাসায়নিক। গরমে এটি বাষ্প আকারে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে, যা শ্বাসতন্ত্রে সমস্যা, চোখ জ্বালা ও ত্বকে অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
২. উচ্চ তাপমাত্রায় আয়রনিং
৪৫০°F তাপমাত্রায় চুল আয়রন করলে কেরাটিন সিল হয় ঠিকই, কিন্তু চুলের প্রাকৃতিক গঠন নষ্ট হয়ে যায়। এই তাপে চুল শুকিয়ে গিয়ে ভেঙে যেতে পারে।
৩. বারবার করা
অনেকেই বছরে একাধিকবার কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করান। এটি চুলকে দীর্ঘমেয়াদে দুর্বল করে তোলে।
কেরাটিন ট্রিটমেন্টের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
চুলে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করলে নিচের সমস্যাগুলি দেখা দিতে পারে:
- অতিরিক্ত চুল ঝরে যাওয়া
- স্ক্যাল্পে চুলকানি ও র্যাশ
- চুলের প্রাকৃতিক ঢেউ নষ্ট হয়ে যাওয়া
- চুল রুক্ষ ও ড্রাই হয়ে যাওয়া
- স্প্লিট এন্ডস বা চুলের গোঁড়া ফেটে যাওয়া
কারা কেরাটিন ট্রিটমেন্ট থেকে দূরে থাকবেন? (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
- গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মা
- যাদের চুল আগে থেকেই রং করা বা ব্লিচড
- অ্যালার্জি প্রবণ স্ক্যাল্প
- যারা হেলথ ইস্যুতে রাসায়নিক ফিউম এড়াতে চান
কেরাটিন ট্রিটমেন্টের নিরাপদ বিকল্প (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
আপনি যদি কেরাটিন ট্রিটমেন্টের ক্ষতি এড়িয়ে চুল মসৃণ করতে চান, নিচের বিকল্পগুলো বেছে নিতে পারেন:
১. হেয়ার বটক্স ট্রিটমেন্ট
রাসায়নিক কম, ডিপ কন্ডিশনিং দিয়ে করা হয়। চুলের গভীর যত্ন নেয়।
২. ন্যানোপ্লাস্টিয়া ট্রিটমেন্ট
প্রাকৃতিক উপাদান নির্ভর ট্রিটমেন্ট যা চুল সোজা ও চকচকে করে।
৩. ঘরোয়া কেরাটিন মাস্ক
সপ্তাহে একবার ডিম, দই, অলিভ অয়েল দিয়ে মাস্ক বানিয়ে চুলে লাগালে স্বাভাবিক কেরাটিন শক্তি ফিরে আসে।
৪. সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার
নিয়মিত ব্যবহারে চুলের কিউটিকল ভালো থাকে।

কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করলে কীভাবে যত্ন নেবেন? (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
যদি আপনি কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করে থাকেন, তবে নিচের টিপসগুলো অবশ্যই মেনে চলুন:
✔️ করবেন:
- সালফেট ও প্যারাবেন মুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
- সপ্তাহে ১-২ বার ডিপ কন্ডিশনিং করুন
- হিট প্রোটেক্ট্যান্ট ব্যবহার করে স্টাইল করুন
- বেশি গরমে চুল ঢেকে রাখুন
- নিয়মিত ট্রিম করুন চুল
❌ করবেন না:
- কেমিক্যাল ক্লেনজিং শ্যাম্পু ব্যবহার
- ট্রিটমেন্টের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চুল ধোয়া
- হেয়ার ক্লিপ, ব্যান্ড, হেয়ার স্টাইল করা
- সুইমিং পুলে চুল ডুবানো
কেরাটিন ট্রিটমেন্ট: লাভ ও ক্ষতির তুলনা (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
বিষয় | উপকার | ক্ষতি |
---|---|---|
ফলাফল | চুল সোজা ও চকচকে | চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হতে পারে |
সময়কাল | ৩-৬ মাস | দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে ক্ষতি |
খরচ | ₹৫০০০–₹১৫,০০০ | পুনরাবৃত্তি ব্যয়বহুল |
স্বাস্থ্য | আত্মবিশ্বাস বাড়ায় | ফরমালডিহাইডে স্বাস্থ্যঝুঁকি |
বিশেষজ্ঞদের মত (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ও হেয়ার স্টাইলিস্টরা বলেন:
“কেরাটিন নিজে ক্ষতিকর নয়, কিন্তু এটি সিল করার জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক এবং উচ্চ তাপ চুলের গঠন নষ্ট করতে পারে। তাই বুঝে, সাবধানে ও নির্দিষ্ট সময় অন্তর ব্যবহার করাই শ্রেয়।”

শেষ কথা (“সতর্ক না হলে ঘটতে পারে মারাত্মক অঘটন”)
কেরাটিন ট্রিটমেন্ট আপনি চাইলে করতেই পারেন। তবে তা যেন হয় নিরাপদ, অভিজ্ঞ পার্লারে এবং প্রয়োজন বুঝে। পারমানেন্ট সমাধান নয়—তাই বারবার না করে, চুলের প্রাকৃতিক যত্নের উপর জোর দিন।
চুল সৌন্দর্যের অঙ্গ, কিন্তু স্বাস্থ্যই আসল সৌন্দর্য। তাই স্টাইলের পাশাপাশি তার সুস্থতাও জরুরি।