হেয়ার পার্মিংয়ের সাইড এফেক্ট: জানুন আগে, সিদ্ধান্ত নিন পরে! (হতে পারে বিপদ! এই ভুল করার আগে জেনে নিন সব বিস্তারিতভাবে – হেয়ার পার্মিং-এর পূর্ণ দিক ও বিপদগুলো)
আজকের দিনে স্টাইলিশ ও কার্লি হেয়ার অনেকেরই পছন্দ। আর তারই সহজ সমাধান হচ্ছে হেয়ার পার্মিং। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে চুলকে কেমিক্যাল ব্যবহার করে দীর্ঘস্থায়ীভাবে কোঁকড়ানো বা ঢেউ-যুক্ত করে তোলা হয়। তবে, পার্মিং যতই ট্রেন্ডি হোক না কেন, এর কিছু গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (side effects) আছে যা জানাটা অত্যন্ত জরুরি।
এই ব্লগে আমরা আলোচনা করব:
- হেয়ার পার্মিং কী?
- চুলে পার্ম করার সময় ব্যবহৃত কেমিক্যালগুলি
- পার্মিংয়ের ক্ষতিকর দিক (সাইড এফেক্ট)
- কাদের জন্য পার্মিং একেবারে নয়
- পার্মিংয়ের পরে চুলের যত্ন
- পার্মিং না করে কী বিকল্প আছে?

হেয়ার পার্মিং কী? (হতে পারে বিপদ! এই ভুল করার আগে জেনে নিন সব বিস্তারিতভাবে – হেয়ার পার্মিং-এর পূর্ণ দিক ও বিপদগুলো: )
হেয়ার পার্মিং (Hair Perming) হলো একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে স্ট্রেইট চুলে স্থায়ী বা আধা-স্থায়ীভাবে কোঁকড়ানো (curly) ঢেউ তৈরি করা হয়। এটি সাধারণত পার্লারে কৃত্রিম কেমিক্যাল ও রডের সাহায্যে করা হয়।
পার্মিং সাধারণত দুই ধরনের হয়:
- কোল্ড পার্ম (Cold perm) – চুলে রাসায়নিক লোশন দিয়ে কোঁকড়ানো হয়
- হট পার্ম (Digital perm) – তাপ এবং কেমিক্যাল দুটোর সংমিশ্রণে কোঁকড়ানো হয়
⚠️ পার্মিং-এর সাইড এফেক্ট — চুলের ক্ষতির আশঙ্কা! (হতে পারে বিপদ! এই ভুল করার আগে জেনে নিন সব বিস্তারিতভাবে – হেয়ার পার্মিং-এর পূর্ণ দিক ও বিপদগুলো: )
১. চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়
পার্মিং-এর জন্য ব্যবহৃত কেমিক্যাল চুলের প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয়। ফলে চুল তার নরম, কোমল গঠন হারিয়ে ফেলে এবং হয়ে ওঠে রুক্ষ, শুষ্ক ও lifeless।
২. চুলের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায়
পার্ম করার ফলে চুল দুর্বল হয়ে যায়। ফলাফল— চুল ছিঁড়ে যায়, ভেঙে যায়, split ends তৈরি হয় এবং চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যায়।
৩. চুলের গঠন স্থায়ীভাবে নষ্ট হতে পারে
অনেক সময় দেখা যায়, পার্ম করার পর চুল তার প্রাকৃতিক গঠনই হারিয়ে ফেলে। পরবর্তী স্টাইল করাও কঠিন হয়ে পড়ে। কিছু ক্ষেত্রে চুল আগের মতো ফেরানোই যায় না।
৪. স্ক্যাল্পে জ্বালা ও অ্যালার্জি
সব ধরনের চুল ও ত্বক কেমিক্যাল সহ্য করতে পারে না। পার্মিং-এর ফলে অনেকেই স্ক্যাল্পে জ্বালা, ফুসকুড়ি, চুলকানি বা অ্যালার্জির সম্মুখীন হন।
৫. গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য পার্মিং ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ পার্মিং কেমিক্যালে থাকা formaldehyde বা অন্যান্য কেমিক্যাল ভ্রূণের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
৬. হরমোনাল ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা
গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক পার্মিং কেমিক্যাল (বিশেষ করে সস্তা ও নিম্নমানের পণ্যে) রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসার, হরমোনের সমস্যা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের জটিলতা তৈরি করতে পারে।

১. চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে পড়ে
পার্মিং-এর সময় ব্যবহৃত কেমিক্যাল চুলের প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয়, যার ফলে চুল হয়ে ওঠে শুষ্ক, প্রাণহীন ও রুক্ষ। Moisture balance নষ্ট হয়ে যায়।
২. চুল ভেঙে যাওয়া ও চুল পড়া বেড়ে যায়
পার্মিং চুলের গঠন ভেঙে দেয়। এতে চুল দুর্বল হয়ে যায়, গোঁড়া থেকে ভেঙে পড়ে, বিশেষ করে যদি আগে থেকেই চুল ড্যামেজ থাকে।
৩. স্ক্যাল্পে জ্বালা বা অ্যালার্জি
পার্মিং লোশন বা নিউট্রালাইজার অনেক সময় স্ক্যাল্পে জ্বালা, লালচেভাব বা চুলকানির কারণ হতে পারে। সংবেদনশীল ত্বকে অ্যালার্জির আশঙ্কা বেশি।
৪. স্প্লিট এন্ডস ও ফ্রিজি হেয়ার
পার্মিং করার ফলে চুলের আগা ফেটে যায়। সেই সঙ্গে চুল হারায় মসৃণতা, হয়ে পড়ে অত্যন্ত frizzy ও unmanageable।
৫. রঙ করা চুলের জন্য আরও বেশি ক্ষতি
যদি চুলে আগে থেকে কালার করা থাকে, তাহলে পার্মিং করলে ক্ষতি আরও দ্বিগুণ হয়। কারণ চুল তখন ডাবল কেমিক্যাল প্রসেসিং-এর শিকার হয়।
৬. স্থায়ীভাবে চুলের টেক্সচার নষ্ট হয়ে যেতে পারে
অনেক সময় পার্মিং এতটাই চুলের গঠন নষ্ট করে দেয় যে ভবিষ্যতে স্ট্রেইট, ওয়েভি বা অন্য কোনো স্টাইল করা যায় না। চুল হয়ে যায় পুড়ে যাওয়া ধরনের।
৭. খুশকি ও স্ক্যাল্পের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে
কেমিক্যালের কারণে মাথার ত্বক তার স্বাভাবিক অয়েল ব্যালান্স হারিয়ে ফেলে। ফলে খুশকি, চুলকানি ও স্ক্যাল্প ইনফেকশনের প্রবণতা বেড়ে যায়।
৮. গন্ধ সমস্যা
অনেক সময় পার্ম করার পর চুলে দিনের পর দিন কেমিক্যালের গন্ধ লেগে থাকে, যা বিরক্তিকর হতে পারে।
৯. অতিরিক্ত কেমিক্যালের সংস্পর্শে হরমোনাল সমস্যা
বেশ কিছু পার্মিং কেমিক্যালে থাকে formaldehyde, যা দীর্ঘমেয়াদে শ্বাসকষ্ট, চোখে জ্বালা ও এমনকি হরমোনাল সমস্যাও তৈরি করতে পারে।

কারা হেয়ার পার্ম একেবারেই এড়িয়ে চলবেন? (হতে পারে বিপদ! এই ভুল করার আগে জেনে নিন সব বিস্তারিতভাবে – হেয়ার পার্মিং-এর পূর্ণ দিক ও বিপদগুলো: )
- যাদের চুল আগে থেকেই ড্যামেজড বা রুক্ষ
- চুলে রঙ করা বা ব্লিচ করা হয়েছে সম্প্রতি
- যাদের সংবেদনশীল স্ক্যাল্প আছে
- যাদের চুল পড়ার সমস্যা রয়েছে
- গর্ভবতী মহিলা (বেশিরভাগ কেমিক্যাল গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকর হতে পারে)
পার্মিংয়ের পর চুলের সঠিক যত্ন (হতে পারে বিপদ! এই ভুল করার আগে জেনে নিন সব বিস্তারিতভাবে – হেয়ার পার্মিং-এর পূর্ণ দিক ও বিপদগুলো: )
যদি আপনি পার্মিং করে থাকেন বা করতে চান, তাহলে অবশ্যই নিচের নিয়মগুলি মেনে চলা উচিত:
- সালফেট-ফ্রি শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন
- সপ্তাহে অন্তত ২ বার ডিপ কন্ডিশনিং করুন
- হিট স্টাইলিং যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন
- চুল আঁচড়ানোর সময় সাবধানে হোন
- নিয়মিত ট্রিম করুন চুলের ড্যামেজ এড়াতে
- চুলে নারকেল তেল বা অর্গান অয়েল ম্যাসাজ করুন সপ্তাহে ১-২ বার

পার্মিং ছাড়াও বিকল্প কী কী আছে? (হতে পারে বিপদ! এই ভুল করার আগে জেনে নিন সব বিস্তারিতভাবে – হেয়ার পার্মিং-এর পূর্ণ দিক ও বিপদগুলো)
আপনি যদি কেমিক্যাল এড়িয়ে কোঁকড়ানো বা ঢেউ যুক্ত চুল চান, তবে নিচের বিকল্পগুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন:
✅ হিটলেস কার্লস:
সুতো, রোলার বা ফ্লেক্সি রড ব্যবহার করে রাতভর রেখে কোঁকড়ানো চুল পাওয়া যায়।
✅ কर्लিং ক্রিম বা মুস:
যাদের হালকা ঢেউ আছে, তারা styling product ব্যবহার করে temporary curls তৈরি করতে পারেন।
✅ ব্রেইড বা বান করে ঘুমানো:
রাতে চুলে পনিটেল বা ব্রেইড করে ঘুমালে সকালে হালকা ঢেউ-যুক্ত স্টাইল পেতে পারেন।

উপসংহার (হতে পারে বিপদ! এই ভুল করার আগে জেনে নিন সব বিস্তারিতভাবে – হেয়ার পার্মিং-এর পূর্ণ দিক ও বিপদগুলো)
হেয়ার পার্মিং নিঃসন্দেহে একটি জনপ্রিয় বিউটি ট্রেন্ড, কিন্তু এর পিছনে লুকিয়ে আছে অনেক সাইড এফেক্ট ও বিপদ। তাই কেবল স্টাইলের জন্য নয়, বরং চুলের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
আপনি যদি সত্যিই পার্মিং করাতে চান, তাহলে:
এবং সবশেষে, চুলের সঠিক যত্ন নিন
আগে একজন দক্ষ হেয়ার এক্সপার্টের পরামর্শ নিন
কেমিক্যালের মান যাচাই করুন