ত্বকের যত্নের প্রথম ধাপ হল ক্লিনজিং বা মুখ পরিষ্কার করা। এটি এমন এক প্রক্রিয়া যা ত্বকের ওপর জমে থাকা ধুলো, ময়লা, অতিরিক্ত তেল এবং মেকআপ দূর করে। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই সাধারণ অভ্যাসেও লুকিয়ে থাকতে পারে বেশ কিছু ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া?
অতিরিক্ত ক্লিনজিং, ভুল ক্লিনজার বেছে নেওয়া, বা ভুল পদ্ধতিতে মুখ ধোওয়া ত্বকের স্বাভাবিক ব্যালান্স নষ্ট করে দিতে পারে, যার ফলে হতে পারে শুষ্কতা, ব্রণ, লালচে ভাব, এমনকি প্রিম্যাচিউর এজিং। আজকের ব্লগে আমরা জানব:
ক্লিনজিং হল এমন এক ধাপ যা ত্বকের ওপর জমে থাকা:
সবকিছুকে তুলে দেয়। ত্বককে “নিঃশ্বাস নেওয়ার” সুযোগ দেয় এবং পরবর্তী স্কিন কেয়ার রুটিন (যেমন টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং) কার্যকর করে।
তবে সমস্যা কোথায়?
সমস্যা তখনই দেখা দেয় যখন আপনি বেশি ক্লিনজিং করেন, বা ত্বকের ধরন না বুঝেই প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন।
প্রতিদিন বারবার মুখ ধুলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল উঠে যায়। এতে ত্বক:
বিশেষ করে শুষ্ক ত্বকে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
ত্বক নিজে থেকেই কিছুটা তেল তৈরি করে, যা সুরক্ষা দেয়।
কিন্তু হারশ ক্লিনজার ব্যবহারে:
অনেক ক্লিনজারে থাকে SLS (Sodium Lauryl Sulfate), যা স্কিনে র্যাশ, জ্বালাভাব বা লালচেভাব তৈরি করতে পারে।
যে কোনো কেমিক্যাল ক্লিনজার বা ফোমে থাকতে পারে পারফিউম, অ্যালকোহল, কনজারভেটিভ—যা:
ত্বকের সুরক্ষার জন্য একধরনের প্রাকৃতিক লিপিড বা তেলজাত পদার্থ থাকে। অতিরিক্ত ক্লিনজিং করলে তা উঠে গিয়ে ত্বক:
অবাক লাগলেও অতিরিক্ত ক্লিনজিং ত্বকের ব্রণ কমায় না, উল্টো বাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ:
অনেক সময় কেমিক্যাল ক্লিনজারে থাকা অ্যাসিড বা এক্সফোলিয়েটিং এজেন্ট ত্বকে হাইপারপিগমেন্টেশন তৈরি করে। বিশেষ করে যদি:
যদি বারবার ত্বক ঘষাঘষি করেন বা হট ওয়াটার ব্যবহার করেন, তাহলে স্কিনের উপরের স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে:
ত্বকের পিএইচ (pH) সাধারণত ৫.৫, যা হালকা অ্যাসিডিক।
ক্লিনজারের অতিরিক্ত ব্যবহার:
ত্বক যদি সবসময় শুষ্ক ও টানটান থাকে, তাহলে:
ত্বকের ধরন | ক্লিনজার টাইপ |
---|---|
শুষ্ক ত্বক | ক্রিম বেসড বা হাইড্রেটিং ক্লিনজার |
তৈলাক্ত ত্বক | ফোমিং বা জেল বেসড ক্লিনজার |
সংবেদনশীল ত্বক | অ্যালকোহল ও পারফিউম মুক্ত |
সকাল ও রাত – এই দুইবারই যথেষ্ট। বারবার মুখ ধোওয়া উচিত নয়।
ত্বক শুকিয়ে গেলে সাথে সাথেই ময়েশ্চারাইজার দিন।
ক্লিনজিং-এর পর বাইরে গেলে অবশ্যই SPF যুক্ত সানস্ক্রিন লাগান।
ত্বকের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, তবে তার সঠিক পদ্ধতি জানা আরও জরুরি। ‘যত বেশি তত ভালো’ এই ধারণাটি ত্বকচর্চার ক্ষেত্রে সবসময় সত্যি নয়।
অতিরিক্ত ক্লিনজিং আপনার ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্যকেই নষ্ট করে দিতে পারে। তাই জেনে-শুনে, বুঝে-শুনে ত্বকের যত্ন নিন।
সঠিক ক্লিনজিং ত্বককে দেয় দীপ্তি, আর ভুল ক্লিনজিং দেয় ক্ষতি!